ইউক্রেনকে আরও আধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জি-৭ জোটভুক্ত দেশের সদস্যরা। রাশিয়ার হামলা মোকাবেলায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অস্ত্রের জন্য অনুরোধের পরেই এমনটা জানিয়েছে জি-৭। খবর রয়টার্সের।
প্রতিবেদনে লন্ডন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাটি জানায়, ক্ষেপণাস্ত্র, আর্টিলারি ও ড্রোন দিয়ে পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনে এখনও হামলা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী।
হামলা মোকাবেলায় কিয়েভের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে মিত্রদের আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) জি-৭ জোটের নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেন জেলেনস্কি। এ সময় রাশিয়ার আগ্রাসন মোকাবেলায় মিত্রদের কাছে আধুনিক ট্যাঙ্ক, কামান এবং দূরপাল্লার অস্ত্র চেয়ে অনুরোধ করেন জেলেনস্কি। এরপরেই জি-৭ জোটের সদস্য দেশগুলো ইউক্রেনের জরুরি প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। এরপরেই প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে যুদ্ধ বাধে। সাম্প্রতিক সময়ে রুশ বাহিনী পেছনে হটলেও ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে তারা। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা জোরদার করছে রুশ বাহিনী। এতে করে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ছে ইউক্রেনীয়রা। এমতাবস্থায় জি-৭ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেনের জন্য অতিরিক্ত ২০০ কোটি কিউবেক প্রাকৃতিক গ্যাস চায় জেলেনস্কি। এমনকি শান্তি আলোচনায় তার প্রস্তাবকে সমর্থন করার জন্য আহ্বান জানান।
এ দিকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর সহায়তায় আরও ২০০ কোটি ইউরো দিতে রাজি হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। অন্যদিকে ইউক্রেনকে ড্রোন ধ্বংস করবে এমন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিতে ইচ্ছুক যুক্তরাজ্য।
সোমবার ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেন, ‘ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিতে আমরা আগ্রহী। এসব ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার ড্রোনকে পরাস্ত করতে পারবে। ’
গত রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে আরও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেওয়া ঘোষণা দিয়েছেন। ফোনালাপে জেলেনস্কিকে বাইডেন বলেছিলেন, ‘ওয়াশিংটন ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে ইচ্ছুক। ’
বেসামরিকদের লক্ষ্যবস্তু করে কোনো হামলা করা হচ্ছে না বলে দাবি করছে মস্কো। তবে তাদের হামলার জন্য ইতোমধ্যে কয়েক লাখ ইউক্রেনীয় অন্যত্র সরে গেছে। এমনকি মারা গেছে কয়েক হাজার।
নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের প্রধান জ্যান এগল্যান্ড বলেছেন, ‘এই শীতে কয়েক হাজার ইউক্রেনীয় শরণার্থীর আরেকটি ঢল ইউরোপে আসবে। ’
রয়টার্স বলছে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর বাখমুতের চারপাশের প্রায় ২০ বসতিতে আঘাত হেনেছে রাশিয়ান আর্টিলারি। এ ছাড়া গত মাসে পুনরুদ্ধার হওয়া খেরসনেও গোলাগুলি হয়েছে।
এ দিকে রুশ হামলার জেরে এখনও অন্ধকারে রয়েছে ইউক্রেনীয়রা। কিয়েভে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা প্রতিষ্ঠান ইয়াসনোর প্রধান সার্জিও কোভালেনকো বলেন, ‘রাজধানীতে বিদ্যুৎ ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা উল্লেখযোগ্য ছিল। ’
দুদিন আগে ওডেসা বন্দরে ইরানি ড্রোন দিয়ে হামলা চালায় রুশ বাহিনী। এতে বন্দরটির কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। তবে দুদিন পর বন্দরের কার্যক্রম ফের শুরু হয়েছে।